ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

নিয়ত মানসধামে একরূপ ভাব।
জগতের সুখ-দুখে সুখ দুখ লাভ।।
পরপীড়া পরিহার, পূর্ণ পরিতোষ।
সদানন্দে পরিপূর্ণ স্বভাবের কোষ।।
নাহি চায় আপনার পরিবার সুখ।
রাজ্যের কুশলকার্যে সদা হাস্যমুখ।।
কেবল পরের হিতে প্রেম লাভ যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?

নাহি চায় রাজ্যপদ নাহি চায় ধন।
স্বর্গের সমান দেখে বন উপবন।।
পৃথিবীর সমুদয় নিজ পরিজন।
সন্তোষের সিংহাসনে বাস করে মন।।
আত্মার সহিত সব সমতুল্য গণে।
মাতাপিতা জ্ঞাতি ভাই ভেদ নাহি মনে।।
সকলে সমান মিত্র শত্রু নাহি যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?

অহংকার-মদে কভু নহে অভিমানী।
সর্বদা রসনারাজ্যে বাস করে বাণী।।
ভুবন ভূষিত সদা বক্তৃতার বশে।
পর্বত সলিল হয় রসনার রসে।।
মিথ্যার কাননে কভু ভ্রমে নাহি ভ্রমে।
অঙ্গীকার অস্বীকার নাহি কোন ক্রমে।।
অমৃত নিঃসৃত হয় প্রতি বাক্যে যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?

চষ্টা যত্ন অনুরাগ মনের বান্ধব।
আলস্য তাদের কাছে রণে পরাভব।।
ভক্তিমতে কুশলগণে আয় আয় ডাকে।।
পরিশ্রম প্রতিজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।
চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা।
যতনে হৃদয়েতে সমুদয় বাসা।।
স্মরণ স্মরণ মাত্রে আজ্ঞাকারী যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?

Post a Comment

Previous Post Next Post