বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ অথবা ভূগর্ভস্থ ফাটলের কারণে নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ যখন মাটির জৈব রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন করে এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করে তখন তাকে মাটি দূষণ বলে। মাটি দূষণের বহুবিধ কারণ রয়েছে। নিচে এগুলো আলোচনা করা হলো :

  • শিল্প-কারখানা ও গৃহস্থালির বর্জ্য পদার্থ মাটিতে মিশে মাটিকে দূষিত করে।
  • তেজষ্ক্রিয় পদার্থের নিঃসরণ মাটিকে দূষিত করে।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস ও কয়লা আহরণের সময় মাটি দূষিত হতে পারে।
  • অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি দূষিত হয়।
  • আবর্জনার স্তূপ মাটিকে দূষিত করে।
  • জমিতে অতিরিক্ত পলি জমে মাটি দূষণ ঘটাতে পারে।


শিল্প কারখানা ও গৃহস্থালির বর্জ্য দ্বারা মাটি কিভাবে দূষিত হয়?

শিল্প কারখানার বর্জ্যে মারকারি, জিংক, আর্সেনিক ইত্যাদি থেকে শুরু করে এসিড, ক্ষার, লবণ, কীটনাশক ইত্যাদি হাজারো রকমের মারাত্মক ক্ষতিকর পদার্থ থাকে। তাই এ জাতীয় দূষণের প্রভাবও বহুমাত্রিক হয়।

যেমন মারকারি ও অন্যান্য ধাতব পদার্থ মাটিতে বিদ্যমান উপকারী অণুজীবসমূহকে মেরে ফেলে, ফলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়। আবার মাত্রাতিরিক্ত লবণ, এসিড বা ক্ষার গাছপালা ও ফসলের ক্ষতিসাধন করে। এ জাতীয় বর্জ্যে থাকা প্রোটিন বা অ্যামিনো এসিড ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙ্গে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস, সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস ও ফসফরাসের অক্সাইড উৎপন্ন করে, যার কারণে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে।

এ ধরনের দূষণের ফলে ক্ষতিকর পদার্থ মাটি থেকে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদেহে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। সর্বোপরি এই জাতীয় দূষণের ফলে মাটির জৈব রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটতে পারে, যা ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post