সেলিনা হোসেন বাংলা শিশুসাহিত্য জগতে অতিপরিচিত একটি নাম। ছোটদের জন্য তিনি ‘আকাশপরী’, ‘জ্যোৎস্নার রঙে আঁকা ছবি’, ‘চাঁদের বুড়ির পান্তা ইলিশ’, ‘সোনার তরীর ছোট মণিরা’, ‘পুটুসপুটুসের জন্মদিন’, ‘বর্ণমালার গল্প’ ইত্যাদি মজার সব গল্প, কবিতা ও ছড়ার বই রচনা করেছেন। সেলিনা হোসেন ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় বগুড়ার লতিফুর প্রাইমারি স্কুলে। তিনি ১৯৬২ সালে পিএন গার্লস হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীকালে ১৯৬৪ সালে রাজশাহী মহিলা কলেজে ভর্তি হন। কলেজজীবন শেষ করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেলিনা হোসেনের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে। এ ছাড়া ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বাংলা একাডেমি থেকে শিশু-কিশোরদের জন্য ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকাটি সম্পাদনা করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। সেলিনা হোসেন মূলত ঔপন্যাসিক। তাঁর উপন্যাসের বিষয়বস্তু সমকালীন সমাজবাস্তবতা ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংকট। বাঙালির অহংকার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সেলিনা হোসেনের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত উপন্যাস বা গল্প পড়ার মাধ্যমে তোমরা স্বাধীনতাযুদ্ধের বাস্তব চিত্র দেখতে পাবে। ‘জলোচ্ছ্বাস’, ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’, ‘নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি’, ‘গেরিলা ও বীরাঙ্গনা’ ইত্যাদি তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিখ্যাত উপন্যাস। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৯ সালে একুশে পদক এবং ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন।
Post a Comment